1. hello@bijoytv.live : বিজয় টিভি : বিজয় টিভি
  2. info@www.bijoytv.live : বিজয় টিভি :
রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন

বন্দর ও করিডোর নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে: ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৮ জুন, ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

মিয়ানমারকে করিডোর দিয়েছে বলে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা সর্বৈব মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

তিনি বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য একটি ত্রাণ চ্যানেলের প্রস্তাব করেছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এটা করা হলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়ক হবে। কিন্তু এটি প্রস্তাব পর্যায়েই রয়ে গেছে।

 

 

শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

 

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমাদের দেশে এখন ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে। প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা এসেছে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর সময়কালে, যখন রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিল। সেখানে চলমান সংঘাত ও মানবিক পরিস্থিতির কারণে এখনও অনেকে আসতে চেষ্টা করছেন।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসা বন্ধ করতে এবং যারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম, তখন রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে প্রায় মৃত অবস্থায় পেয়েছিলাম। আন্তর্জাতিক এজেন্ডা থেকে ইস্যুটি ঝরে পড়েছিল। সেই অবস্থা থেকে আমরা ইস্যুটিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টির সম্মুখভাগে নিয়ে আসতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছিলাম। আপনারা জেনে খুশি হবেন, জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র এ বিষয়ে একমত হয়েছে এবং তারা একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।’

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা আন্তর্জাতিক জনমত গঠন করতে পেরেছি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করেছেন যে, মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান।’

তিনি বলেন, প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আরেকটি বড় অগ্রগতি হচ্ছে মিয়ানমার সরকার কর্তৃক প্রত্যাবাসনযোগ্য রোহিঙ্গাদের সর্বপ্রথম তালিকার ঘোষণা। গত এপ্রিল মাসে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে আলোচনার সময় মিয়ানমার সরকার প্রথমবারের মতো ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনযোগ্য বলে ঘোষণা করেছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ও আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সরকারসহ সেখানকার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আমরা যত দেশেই সফর করেছি সব দেশে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় নেতা ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। তারাও ইতিবাচকভাবে আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব গত মার্চ মাসে ঢাকা সফরকালে রাখাইন রাজ্যে মানবিক বিপর্যয়ের মোকাবেলার জন্য একটি ত্রাণ চ্যানেলের প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন এই প্রস্তাবটি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়ক হবে। বিষয়টি প্রস্তাব পর্যায়েই রয়ে গেছে।’

বাংলাদেশ করিডোর দিয়ে দিয়েছে বলে একটা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমি সুস্পষ্টভাবে বলছি, এটি সর্বৈব মিথ্যা। এটা চিলে কান নিয়ে যাওয়ার গল্প। যারা অসত্য কল্পকাহিনি বানিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করে অশান্তি সৃষ্টিতে নিয়োজিত, এটা তাদেরই শিল্পকর্ম।

আপনারা এ বিষয়ে হুঁশিয়ার থাকবেন। কোনোভাবেই বিভ্রান্ত হবেন না। এসব অপপ্রচার সত্ত্বেও আমরা লক্ষ্যচ্যুত হবো না। এই জটিল সমস্যাটি সমাধানে আমাদের কাজ চালিয়ে যাব।

চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ ও সমালোচনা নাকচ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, যাদের বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশ বহুমাত্রিক উপকার পাবে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে বাংলাদেশিরাই বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন বন্দর পরিচালনায় সক্ষম হবেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর অর্থনৈতিকভাবে আমাদের যে উন্নতির শিখরে থাকার কথা ছিল, বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার কথা ছিল সে উচ্চতায় আমরা পৌঁছাতে পারিনি। আমরা চাই, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক। এ কারণে বিনিয়োগ পরিষেবার উন্নয়নের পাশাপাশি বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছি। এটা করা সম্ভব না হলে দেশের কোটি কোটি মানুষের বেকারত্ব ঘুচবে না। অর্থনৈতিক সংকট রয়েই যাবে।

তিনি বলেন, মাঝে মাঝে এমন কথাও শুনেছি যে এ বন্দর বিদেশিদেরকে নাকি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি আগেও জানিয়েছি, চট্টগ্রাম বন্দর হলো বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। বর্তমানে এই হৃৎপিণ্ড অতি দুর্বল। এখন যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় তাকে রেখে দিলে আমাদের অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। এই হৃদপিণ্ডকে বড় করতে হবে। মজবুত করতে হবে। সুঠাম করতে হবে। তা করতে হলে বহু উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অভিজ্ঞদের সাহায্য লাগবে। আমরা যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি তারা বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের সেরা, সবচেয়ে অভিজ্ঞ। তারা ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাসহ বিশ্বজুড়ে বন্দর পরিচালনা করে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত,  বিজয় টিভি .লাইভ আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট